মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার টেংগারচর, হোসেন্দী ও ইমামপুর ইউনিয়নে বৃহস্পতিবার নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ছয় জন আহত হয়েছে। পুলিশ অন্তত দুই জনকে আটক করেছে।টেংগারচর বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম সালাউদ্দিন মাস্টার নির্বাচনে হেরে যাওয়ায় তার সমর্থকদের হামলায় আহত হয়েছে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এখলাসুর রহমানের ৫ সমর্থক। আহত শাহ আলম (৪০),মিজানুর রহমান(৩৫),বারেক মিয়াজী (৪৫),দুলাল মিয়া(৫০),রূপা ও বেগমকে(৩২) বিভিন্ন হাসপাতাল এবং হোসেন্দির ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় আমান উল্লাহ(৫০) নামে এক আক্তার হোসেন সমর্থককে ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এসময় অন্তত ৩টি গাড়ি, ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। এ ঘটনায় ইউনিয়নির চেয়ারম্যান এসএম সালাউদ্দিন মাস্টারসহ বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে ইমামপুর ও ভবেরচর ইউনিয়নেও। টেংগারচর ইউপির পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এখলাসুর রহমান বলেন, ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম সালাউদ্দিন মাস্টার এবং তিনি পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে গজারিয়া উপজেলার টেঙ্গারচর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচনে তিনি এবং সালাউদ্দিন মাস্টার উভয়ে হেরেছেন। ভোটের হিসাবে তিনি দ্বিতীয় হয়েছে।তবে নির্বাচনে হারার কারণ হিসেবে সালাউদ্দিন মাস্টারের সর্মথকরা তাকে দায়ী করে আসছে। ফলাফল ঘোষণার পর থেকে তারা বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকি দিয়েছিল। বৃহ¯পতিবার ভোর ছয়টার দিকে সালাউদ্দিন মাস্টারের উপস্থিতিতে তার কয়েকশো সমর্থক হামলা চালায় তার বাড়ি ঘরের উপর। এসময় তার বাড়িসহ তার অন্তত নয় সমর্থকদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
নির্বাচনের কাজে ব্যবহৃত তার দুইটি প্রাইভেটকার এবং একটি মাইক্রোবাসে ভাঙচুর চালায় হামলাকারীরা। এ সময় তাদের হামলায় আহত হয় তার ৫জন সমর্থক। আহতদের মধ্যে শাহ আলম এবং মিজানুর রহমানের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দিয়েছে চিকিৎসক। বিষয়টি সম্পর্কে জানতে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রইছ উদ্দিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম সালাউদ্দিন মাস্টারকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িত বাকিদের আটককৃতদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে হামলার ঘটনা ঘটেছে উপজেলাতে ইমামপুর এবং ভবেরচর ইউনিয়নেও। ষোলআনী গ্রামে ইমামপুর ইউনিয়নের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মনসুর আহমেদ খান জিন্নাহর ৬ সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর এবং ভবেরচর ইউনিয়নের লক্ষীপুর,সাত কাহনিয়া গ্রামের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মুক্তার হোসেনের ৪ সমর্থকের বাড়িঘরে ভাঙচুর করে।এদিকে নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের গোয়ালগাঁও গ্রামে সদ্য নির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থককে জবাই করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়নটি থেকে পরাজিত আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের বিরুদ্ধে। আহত আমানউল্লাহ গোয়ালগাঁও গ্রামের মৃত আনোয়ার আলীর ছেলে। এদিকে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে ইব্রাহিম (৩৫) নামে এক জনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত আমান উল্লাহ ছেলে শাহ আলম বলেন, তার বাবা হোসেন্দী ইউনিয়ন থেকে নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী আক্তার হোসেন এর কর্মী ছিলেন। বুধবারের নির্বাচনে আক্তার হোসেন বিজয়ী হওয়ায় তিনি আক্তার হোসেনকে শুভেচ্ছা জানাতেও গিয়েছিলেন।প্রতিপক্ষ হামলা চালায় তাদের বাড়িতে। তার বাবা দৌড়ে তার চাচার বাড়িতে ঢুকে বাঁচার চেষ্টা করলেও তা পারেননি। সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকেই এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে তার গলা কেটে তাকে রেখে যায়। তার গলায়, ঘাড়ে, পেটে সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ রইছ উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে একজনকে আটক করা হয়েছে।